১৯৪৭ সালের গরম দুপুর।
আমাদের গ্রাম, যেখানে সূর্যও যেন মন খারাপ করে আকাশ থেকে ঝলমল করছিলো।
দূরে কোথাও ট্রেনের সাইরেন কাঁপাচ্ছে বুকে, যেন কে যেন বিদায়ের গান শুনাচ্ছে।
আমার দাদা তখন দশ বছর বয়সী।
সে জানতো না দেশ ভাগ মানে কী, শুধু শুনতো বড়রা একে অন্যের কথা বলছে ভয় আর বিষাদের মধ্যে।
“বাবা চলে যাবে, ঠাকুরদা চলে যাবে, আর আমরা ভাগ হয়ে যাবো,”
এমন কথা শুনে ওর চোখ বড় হত।
গ্রামের বাড়িগুলো এক এক করে খালি হতে শুরু করল।
সবার মনে একটাই প্রশ্ন “কেন এমন হলো?”
আমরা কি ভাগ হয়েছি? কেন আমাদের পরিবারগুলো এখন এক সাথে নেই?
দাদার মা বলতেন, “এটা দেশের ভাগ,
মানুষের ভাগ নয়।
তোমরা বড় হয়ে বুঝবে, আমাদের হারিয়ে যাওয়া পরিবারগুলো আবার কখনো মিলবে।”
দিন গড়াল, বছর গড়াল, দাদা বড় হল।
সে দেখল, তার বন্ধুরা এখন ভিন্ন দেশের বাসিন্দা, ভিন্ন ভাষায় কথা বলে।
তবুও মাঝে মাঝে তারা লেখে চিঠি, গল্প শোনায়, দেশ ভাগের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।
একদিন দাদা বলল, “দেশ ভাগ হলো, কিন্তু মানুষের ভালোবাসা তো ভাগ হয়নি।
আমাদের হৃদয় তো সবসময় একসঙ্গে থাকবে।”
আর তাই,
দেশের নাম যাই হোক,
আমরা এক জাতি, এক পরিবার, এক হৃদয়।